শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৬ অপরাহ্ন
বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে চিকিৎসা সেবার মান ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে গবেষণার পর দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, বাংলাদেশে ষাট শতাংশের বেশি মানুষ বছরে বেসরকারি খাত থেকে স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে থাকেন। কিন্তু সেখানেও বাণিজ্যিক মুনাফাই মূল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, সরকারি চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে চাহিদা বেশি কিন্তু সরবরাহ নেই। তাই সুযোগ সঠিকভাবে না মেলায় অধিক খরচ করে বেসরকারি চিকিৎসা সেবার দিকে ঝুঁকছে সাধারণ মানুষ। কিন্তু সেখানেও বাণিজ্যিক মুনাফাই মূল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বিবিসি বাংলাকে বলেন, বেসরকারি খাতের চিকিৎসা সেবার মান নিয়ে ব্যাপক মানুষের হতাশা আছে বাস্তবসম্মত কারণে। হাসপাতাল-ক্লিনিকের নামে যেসব প্রতিষ্ঠান চলছে সেখানে বাস্তবে যারা প্রশিক্ষিত সেবা-দানকারী থাকার কথা তার বিপরীতে বিভিন্ন অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে সেবা দানকারীরা সুযোগ নিচ্ছে।
তিনি বলেন, চাহিদার বিপরীতে সরবরাহের ব্যবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এ সংক্রান্ত আইনের ঘাটতির কারণে মুনাফা ভিত্তিক চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু হয়েছে। সেখানে আইনের নীতি প্রয়োগের ঘাটতি এবং নিয়ন্ত্রণ ও তদারকিতে ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। ফলে দেশের বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নেই।
বেসরকারি চিকিৎসা খাতের অনিয়মের বেশ কয়েকটি দিক তুলে ধরা হয় টিআইবির পক্ষ থেকে-
১. স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নেই।
২. নিয়মিত তদারকি না থাকায় সেবার অতিরিক্ত মূল্য, চিকিৎসার নামে সম্পূর্ণ মুনাফা-ভিত্তিক বাণিজ্য হচ্ছে।
৩. বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয় না।
৪. প্রতারণা-নির্ভর হচ্ছে অর্থাৎ অনেক সময় চিকিৎসার নামে প্রয়োজনের তুলনায় আরও বেশি ব্যয়-সম্মত চিকিৎসা রোগীদের অফার করা হচ্ছে।
৫. কোনো কোনো অভিযোগের ক্ষেত্রে অভিযোগ দাখিলসহ নিরসন প্রক্রিয়ার কোনও সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থাপনা নেই।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এই খাতেও সরকারি খাতের চিকিৎসকদের ওপর নির্ভরশীলতা রয়েছে এবং এ কারণে দুটি ক্ষেত্রই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরকারি সেবাখাতেও পর্যাপ্ত সেবা তারা দিতে পারছেন না আবার বেসরকারি খাতে যখন আসছেন মানসম্পন্ন চিকিৎসা দিতে পারছেন না।
সূত্র : বিবিসি বাংলা